Pages

Wednesday, 10 October 2018

Plight of Aged People


প্রবীণদের পাশে থাকুন


চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়নের ফলে মানুষের গড় আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পাচ্ছে ।তাই সমাযের ব্যবধানে প্রবীণের সংখ্যাও বাড়ছে। বার্ধক্য জীবনের অনিবার্য একটি ধাপ । যা কারো পক্ষে জয় করা সম্ভব নয়।এ সময় তারা কর্মস্পৃহা হারিয়ে ফেলে। যাদের বয়স ৬৫ বছরের উপরে তাদেরকেআমরা প্রবীণ বলি। আসলে তারা আমাদের অগ্রজ।এ প্রবীণদের সান্নিধ্যেই বেড়ে ওঠে পরবর্তী প্রজন্ম।তাই  আদিকাল থেকে তারা শ্রদ্ধার সর্বোচ্চ স্থান দখল করে আছে ।কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হল বর্তমানে প্রবীনরা সমাজের আবহেলার পাত্র হয়ে দাড়িয়েছে ।সারা জীবন কষ্ট করেও বৃদ্ধ বয়সে এসে তাদের কপালে সুখ জোটে না।খুব আসহায় ও মানবেতর জীবন যাপন করে তারা ।প্রথমত তারা ভাবের আদান প্রদানের ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছে। বিশ্বায়নের যুগে কালচার খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে ।তাই তারা এ পরিবর্তিত কালচারের সাথে মানিয়ে উঠতে পারছে না । ফলে তাদের সামাজিক যোগাযোগ ব্যহত হচ্ছে।
 বর্তমান শিল্পায়নের ফলে পারিবারিক কাঠামো পরিবর্তন হয়ে হচ্ছে। অর্থাৎ যৌথ পরিবারের সংখ্যা কমে একজক পরিবারে সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে প্রবীনরা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। তাদের ভোগান্তিও বাড়ছে।
সন্তান কর্তৃক পিতা মাতার ভরণ পোষণ নিশ্চিত করতে “পিতা-মাতা ভরণ-পোষণ আইন-২০১৩” প্রনয়াণ করা হলেও সন্তানরা তাদের পিতা মাতার প্রতি উদাসীন ।করণ শিল্পায়নের ফলে মানুষের মনজগতে বড়ধরনের পরিবর্তন সাধিত হয়রছে । পূর্বে মানুষ ভাবত, “আমি পরিবারের জন্য”। কিন্তু বর্তমানে তারা ভাবে, “পরিবার আমার জন্য”। তাই প্রবীনদের যত্ন নেয়ার বিষয়টি অতি তুচ্ছ।
এ হল বর্তজমান পরিস্থিতি । ভবিষতের চিত্র আরো ভয়াবহ ।পরিংখ্যান অনুযায়ী আগামী ২০২৫ সাল নাগাদ দেশে প্রবীনের সংখ্যাআ হবে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ। ২০৫০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি এবং ২০৬১ সালে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি প্রবীন জনগোষ্ঠী হবে। যা ঐ সমায়ের জ্জন্সংখ্যার ২০ শতাংশ। সে পরস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। 
আশার কথা হল, বাংলাদেশ বর্তমানে ডেমোগ্রাফিক ডেভিডেন্ট বা জন্সংখ্যাতাত্ত্বিক সুবিধা ভোগ করছে।অর্থাৎ বাংলাদেশে বর্তমানে ১৫ থেকে ৬৪ বয়সী জন্সংখ্যা বেশি( ৬৬ শতাংশ)। তাই এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে জন সম্পদে পরিণত করতে পারলে প্রবীন্দের ভাল রাখা সভব হবে। তাই প্রবীণদের সুখে রাখতে তরুণদেরকেই কাজে লাগাতে হবে।
প্রবীণদের প্রতি অবহেলার আরো একাটি বড় কারণ হল এ সময় প্রবীণরা বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত থাকে।অনেকসন্তান বা আত্নীয়দের জন্য চিকিৎসা ব্যয় বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। তাই প্রবীন্দের চিকিৎসা ব্যয়ের ক্ষেত্রে রাস্ট্রীয় সাহায্য প্রয়োজোন।আবার কল্যানমূলক ব্যবস্থাদি,উন্নত বৃদ্ধাশ্রম আর বয়স্ক ভাতাই যথেষ্ঠ নয় কারণ এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ,৮৮ ভাগ প্রবীণ মান্সিক নির্যাতনের শিকার হন। এছাড়া ৪৪ ভাগ অর্থনৈতিক নির্যাতনের শিকার এবং ৩৯ ভাগ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন। তাই এ দুঃসময়ে তাদের পাশে থাকা আমাদের মানবিক দায়িত্ব।এটা তাদের প্রতি করুণা নয় তাদের অধিকার।


 দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকায় প্রকাশিত
০৭ অক্টোবর ২০১৮

No comments:

Post a Comment